বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি কারাগারে আমারণ অনশন শুরু করেছে ৮২ বাংলাদেশী।

গত বুধবার থেকে টেক্সাসের ‘এল পাসো’ কারাগারের ওই ৮২ বন্দি আমরণ অনশন ধর্মঘটে যান।

 এর আগে তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের সে আবেদন নাকচ করে দিচ্ছে- এমন খবরে তারা অনশন শুরু করেন। অভিবাসন বিরোধীরা এ সব বাংলাদেশীকে ‘ভিনগ্রহের আগন্তুক’ আখ্যা দিয়ে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠাতে চাপ সৃষ্টি করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংস্থা ‘ডেজিজ রাইসিং আপ অ্যান্ড মুভিং (ড্রাম)’ এর কর্মী কাজী ফৌজিয়া অনশনরত বাংলাদেশীদের উদ্ধৃত করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, ‘আমাদের হারানোর কিছু নেই। আর তাই আমরা এখন আন্দোলনে।’

কাজী ফৌজিয়া আরও জানান, চার মাস থেকে শুরু করে বছর খানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন ওই ৮২ বাংলাদেশী। নিজেদের ‘বিএনপির কর্মী’ দাবি করে দেশে জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে যুক্তিতে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

তবে মার্কিন অভিবাসন সংস্থা ও ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’র কাছে বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রায় দুই মাস আগে থেকে তাদের ওই আবেদন বাতিল হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, বিএনপির বিরুদ্ধে ওঠা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে ‘ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন প্রজেক্ট অব ন্যাশনাল ল’য়ার্স গিল্ড’।

তারা বলছে, বিএনপি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে অভিবাসীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করা যাবে না।

 সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী অভিবাসীদের আইনগত অধিকার সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়েছে। এছাড়া মানবাধিকার সংস্থাগুলো কারাবন্দি ৮২ বাংলাদেশীর আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে।
 এদিকে কর্তৃপক্ষ অনশনরতদের দমন করতে এরই মধ্যে ১৪ জনকে টেক্সাসের অন্যান্য কারাগারে স্থানান্তর করেছে বলে জানা গেছে।
 পাসপোর্ট ও অন্যান্য নথিপত্র রয়েছে, এমন একজন অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এরই মধ্যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। একই কায়দায় শিগগিরই ফেরত পাঠানো হচ্ছে আরও ৩৩ জন বাংলাদেশীকে।
 অন্যদিকে, এ উদ্যোগের প্রতিবাদ জানিয়ে অনশনরত ৮২ জন বাংলাদেশীর সঙ্গে দুজন আফগান ও একজন পাকিস্তানি নাগরিকও যোগ দিয়েছেন।