দেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গতরাতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করেছে। চলমান ছাত্র আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তার বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউএনবির খবরে জানানো হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গতরাতে শহিদুল আলমকে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে আটক করেছে।
আটক আলোকচিত্র শিল্পীর প্রতিষ্ঠিত দৃক গ্যালারি থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রোববার রাত ১০টার দিকে ড. শহিদুল আলমকে জোরপূর্বক তার ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে তারা আরও বলেছে, ৩০ থেকে ৩৫ জন সাদা পোশাকধারী নিজেদেরকে ‘ডিবির লোক’ পরিচয় দিয়ে শহিদুল আলমকে বাসা থেকে নামিয়ে আনেন। বাইরে অপেক্ষারত একটি গাড়িতে জোর করে তোলার সময়ে তিনি চিৎকার করছিলেন। গাড়িটির গায়ে লেখা ছিল, ‘পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স’।
তারা বিল্ডিংটির সিসিটিভি ক্যামেরাটি টেপ করে দিয়ে, হার্ডডিস্কের সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে যায় এবং বাসার দারোয়ানদেরকে ধাক্কা মেরে তালাবদ্ধ করে রেখে যায়। তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ এসময় পার্শ্ববর্তী ফ্লাটে ছিলেন। তার চিৎকার শুনে তিনি সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নেমে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে তাকে বহনকারী গাড়িটি এবং এর সঙ্গে থাকা আরও দুটি গাড়ি দ্রুতবেগে চলে যায়।
পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা শনিবার বিকেলে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। ধানমন্ডির সিটি কলেজের কাছে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ভিডিও করার সময় তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ঘটনার পর পরই পাশের একটি গেস্ট হাউজে আশ্রয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে হামলার কথা জানিয়েছিলেন শহিদুল। তিনি বলেছিলেন, সিটি কলেজের পাশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে তাকে আক্রমণ করা হয়। ভিডিও করার জন্যই তার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
এই ভিডিও ক্লিপটি পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
ভাঙচুর হওয়া নিজের ক্যামেরার ছবিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন তিনি। আল জাজিরাকে টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছাত্র আন্দোলনে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন তিনি।