একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ শেষ হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। শেষ দিনে সংলাপে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি (জেপি) ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি।
মোট ৪০টি দল এ সংলাপে অংশ নেয়। বেশির ভাগ দলের পক্ষ থেকে এমন কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ইসির পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এর পরও ইসি এসব প্রস্তাব লিপিবদ্ধ করে প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বলা হয়েছে, সংলাপে যেসব ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐকমত্য হবে সেসব প্রস্তাব আমলে নেওয়া হবে।
নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা ও সেনা নিয়োগ বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের অবস্থানই দুই মেরুতে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলগুলো বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই নির্বাচন চায়। নির্বাচনে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে সেনা নিয়োগেরও বিপক্ষে এ জোটের শরিকরা। অন্যদিকে সংসদের বাইরে থাকা দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটসহ গত নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলো নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বিশেষ ক্ষমতাসহ সেনা নিয়োগের পক্ষে।
সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা এবং সেনা নিয়োগ বিষয়ে প্রায় সব দলই নিজস্ব অভিমত দিয়েছে।
সে তুলানায় সীমানা পুনর্নির্ধারণ, ‘না’ ভোটের বিধান চালু, ইভিএম ব্যবহার এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে সব দলের অভিমত পাওয়া যায়নি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং নির্বাচনসংক্রান্ত অন্যান্য আইন বাংলায় রূপান্তরের বিষয়ে অনেক দলেরই সমর্থন মিলেছে। দুটি দল নির্বাচনে প্রার্থীর ব্যক্তিগত আট তথ্যসহ হলফনামা দাখিলের বিধান বাতিল চেয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদেরই রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া এবং সংসদে নারী আসনের সংখ্যা বাড়িয়ে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছে বেশ কয়েকটি দল।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চালু করার পক্ষে মত দিয়েছে আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল। এর বিপক্ষে মত ১১টি দলের। বাকি ২২ দলের এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো মত পাওয়া যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সব দলও ইভিএম প্রশ্নে একমত নয়। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে বেশির ভাগ দলই কোনো অভিমত রাখেনি। বিদ্যমান সীমানা বহাল রাখতে বলেছে আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল। ভোটারসংখ্যার ভিত্তিতে পরিবর্তন বা ২০০৮ সালের আগের সীমানা পুনর্বহাল চেয়েছে বিএনপিসহ ছয়টি দল।