কলকাতা-দিল্লি-বেঙ্গালুরুসহ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা। কাশ্মীর জয় করতে হলে এমনটাই করতে হবে বলে জানিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি।
মেহমুদের হুমকি- ভারতীয় সেনাবাহিনী ও হিন্দু সরকার পরিচালিত শান্তির দুনিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে। তার কথায়, কলকাতা, বেঙ্গালুরু বা দিল্লি যদি আক্রান্ত হয়, তবেই হুঁশ ফিরবে। এবং কাশ্মীরের ওপর থেকে মুঠো আলগা হবে।
তার দাবি, কাশ্মীরকে হাতে রাখতে এই মুহূর্তে সেখানে মোতায়েন রয়েছে প্রায় ৬ লাখ ভারতীয় সেনা। অন্য শহরে আক্রমণ হানলে সেই সেনা সরাতে বাধ্য হবে ভারত। আর তখনই কাশ্মীরের উপর থেকে ভারতীয় সেনার রাশ আলগা হবে। আর তাতেই নাকি মুক্তির স্বাদ পাবে কাশ্মীর উপত্যকা!
মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, দিল্লির মতো বড় শহরে জঙ্গি হামলা এর আগে একাধিকবার হয়েছে। কিন্তু, ২০০২ সালে আমেরিকান সেন্টারে হামলা ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোনও বড়সড় হামলা হয়নি কলকাতায়। কিন্তু, সেই কলকাতার নাম এবার আল কায়দার মুখে!
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়দার শাখা সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম। যারা মূলত বাংলাদেশে মুক্তমনাদের খতম করার অভিযোগে অভিযুক্ত। নাম পাল্টে তারা এখন আনসার আল ইসলাম। সম্প্রতি তাদের তিন সদস্য কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে ধরা পড়েছে। এবং কলকাতাতেই।
এত দিন গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল, বাংলাদেশে মুক্তমনারাই তাদের লক্ষ্য ছিলেন। কিন্তু, এই তিন জনকে গ্রেপ্তার করে জেরা করার পর তাঁরা ভাবিত। কেন ওই তিন জনকে দিয়ে এ রাজ্যে রেকি করানো হচ্ছিল, তা খোঁজার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। অতীতে, আজ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে, কলকাতারই বন্দর এলাকায় আল কায়দার নামে কুপন বিক্রি হতে দেখা গিয়েছিল। টাকাও তোলা হয়েছিল সেই সময় প্রচুর। তাই, মেহমুদের হুমকি ফের গোয়েন্দাদের ভাবাচ্ছে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপমহাদেশের মাটিতে জিহাদি আন্দোলনের বীজ বুনতে এ শহর এখন জঙ্গি সংগঠনের নজরে। কলকাতা-সহ অন্য শহরগুলো কেন আল কায়দার মুখে উঠে আসছে? মেহমুদের ভিডিওতেই সেই জবাব মিলছে। তার মন্তব্য, উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন জোরদার করার প্রয়োজন এসেছে। পাশাপাশি, কাশ্মীরের মানুষের পাশে গোটা অঞ্চলের সকল মুসলমানের দাঁড়ানো উচিত।
সাক্ষাৎকার ভিত্তিক ওই ভিডিওতে কাশ্মীরে নিজেদের কৌশল নিয়েও কথা বলেছে মেহমুদ। তার দাবি, বহু মুজাহিদিন কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তানে চলে গিয়েছে। এখনও যাচ্ছে। এ বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করে সে। পাকিস্তানি সেনাদের জন্যই নাকি মুজাহিদিনরা নিজেদের কাজকর্ম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সে ২০১২-তে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি শেখ আহসান আজিজের উপর ড্রোন হামলার উল্লেখও করেছে। মেহমুদের দাবি, রাজনৈতিক ভাবে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান হবে না। তার কথায়, যে সমাধানসূত্রে কোনও রক্ত-ঘাম ঝরে না, জিহাদ নেই, মৃত্যু নেই, ক্ষমতার কেন্দ্রে কোনও পরিবর্তন নেই- সেটা শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ এক অস্থায়ী চেষ্টা মাত্র।