আজ শুভ বিজয়া, আজ মর্ত্য ছাড়বেন দুর্গতিনাশিনী। ফিরবেন কৈলাশে। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ ও কল্যাণ এবং সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে নিরন্তর শান্তি ও সম্প্রীতির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ সমাপন ঘটবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচে’ বড় উত্সব শারদীয় দুর্গা পূজা। । শাস্ত্র অনুযায়ী, শাপলা, শালুক আর বলিদানের মাধ্যমে দেবীর পূজা হবে। তাই ঢাকের বোলে নিনাদিত হচ্ছে-‘ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ ঠাকুর যাবে বিসর্জন’। বহু মণ্ডপের লাউড স্পিকারে মন্দ্রিত হচ্ছে -‘নবমী নিশি যেন আর না পোহায়, তোকে পাবার ইচ্ছা মাগো কভু না ফুরায়….। সমসনাতন বিশ্বাসে- বোধনে ‘অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে। টানা পাঁচদিন মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে আজ ফিরে যাবেন কৈলাশে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে।’ ঢাকের বাদ্য, নাচ, সিঁদুর খেলা। ধান, দুর্বা, মিষ্টি আর আবির দিয়ে দেবীকে বিদায় জানাবে ভক্তরা।
গতকাল নবমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে ছিলো বিদায়ের সুর। নবমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় মহানবমী কল্পারম্ভ বিহিত ও সন্ধি পূজা। নানা আচারের মধ্য দিয়ে মহানবমীর পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন। সাধারণত মহাষ্টমীর শেষ এবং মহানবমী তিথির সংযুক্ত সময়ে সন্ধি পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই সন্ধিক্ষণেই দেবী দুর্গার হাতে অসুর বধ হয়েছিল। আবহাওয়ার প্রতিকূলতা উত্সবে বাধ সাধেনি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে জড়ো হন অগণিত ভক্ত। নতুন পোশাকে ভক্তদের উপস্থিতি বেশ উল্লেখযোগ্য। পরিবার প্রিয়জন নিয়ে আসেন দেবীকে শেষবারের মতো দেখতে অনেকেই। মন্ত্র আর উলুধ্বনিতে মুখর থাকে মণ্ডপ।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা শুধুমাত্র দেবী দর্শনের জন্য। দেবীর কাছে ভক্তদের নানা প্রার্থনা।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ শনিবার সকালে বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা বের করা হবে। দেবী দুর্গাসহ অন্যান্য দেব-দেবীকে এ শোভা যাত্রাসহ সদরঘাট নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বিসর্জনের মাধ্যমে তাদের আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানো হবে।
এদিকে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। প্রতিটি পূজা মণ্ডপেই বিতরণ করা হয় প্রসাদ। প্রসাদের পাশাপাশি সন্ধ্যায় ছিলো আরতি প্রতিযোগিতা। ঢাক ঢোলে আর নৃত্যে মেতে ওঠে মণ্ডপ।