সৌদি আরব তথা মধ্যপ্রাচ্য ও জার্মান, বৃটেন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হল পবিত্র রমাজানুল মোবারক।
শুরু হল সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। শাবান মাস বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে আকাশে এক ফালি চাঁদ ওঠার মাধ্যমে রহমত, বরকত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে ধনী-গরিব, ছোট-বড়, আরব-
আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রামাদান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য রামাদান মাস সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস, কল্যাণ ও বরকতের মাস, রহমত ও মাগফিরাত এবং জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তি লাভের মাস। মহান আল্লাহ এ মাসটিকে বহু ফযীলত ও মর্যাদা দিয়ে অভিষিক্ত করেছেন।
রোজাকে আরবি ভাষায় সিয়াম বা সাওম, আর ফার্সিতে রোজা বলা হয়। সাওম অর্থ বিরত থাকা। আর শরীয়তের পরিভাষায় ফরজ রোজা রাখার নিয়তে সুব্হে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত জিহ্বা অর্থাৎ কোন কিছু পানাহার এবং (স্ত্রী সহবাস) লজ্জাস্থানকে নিয়ন্ত্রণ রাখার নাম সাওম বা রোজা।
মহান আল্লাহ্পাক রাব্বুল আলামীন মুমিন বান্দাদিগকে তাঁর কাছে টেনে নেয়ার জন্য এই পবিত্র মাসের রোজাকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন। প্রথম দশদিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় দশদিন দোযখ থেকে মুক্তির জন্য। আল্লাহ পাকের নির্দেশে আকাশের মেঘমালা বছরের প্রথমে যে বারিধারা বর্ষণ করে থাকে, তাতে মৃত জমিন যেমন সুজলা-সফুলা, শস্য-শ্যামল হয়ে পৃথিবীকে নব শক্তিতে বলিয়ান করে থাকে।
অনুরূপভাবে মাহে রমজানের রোজা মুমিন বান্দাদের আত্মাকে নব শক্তিতে বলিয়ান করে। ইসলামের প্রথম স্তম্ভ নামাজ যেমন মুমিনদেরকে শিক্ষা দেয় শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তি। তেমনি মাহে রমজানের রোজা শিক্ষা দেয়, তাক্ওয়া, সহিঞ্চুতা ও সংযম। মহান আল্লাহ্পাক সমস্ত মানবজাতিকে সম্বোধন করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন যে, হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো (সূরায়ে বাকারা-১৮৩)
আল্লাহ্পাক আরও ঘোষণা করেন যে, রমজান মাস, ইহাতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে আল কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে। এবং কেউ পীড়িত থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না, এজন্য তোমরা সংখ্যাপূর্ণ করবে এবং তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহ্র মহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো (সূরায়ে বাকারা-১৮৫)
বছর ঘুরে আবার উপস্থিত হয়েছে পবিত্র বরকতময় রমজান মাস। রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের রমজানের পুরো হক আদায় করার তৌফিক দান করেন। আমরা যেন রমজানজুড়ে কামিয়ে নিতে পারি খোদার মেহেরবানি। এ রমজানে খোদা যেন গোটা দুনিয়ায় তার রহমতের চাদর বিছিয়ে দেন।