পাসপোর্ট নবায়ন , নতুন পাসপোর্ট তৈরি , নো ভিসা রিকোয়ারড এইসবের ভোগান্টির অন্ত ছিল না জার্মান প্রবাসীদের এখন এলো নতুন ভোগান্তি ডিজিটাল পাসপোর্ট তৈরি এবং নবায়ন। প্রবাসিরা ফোন করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোজ পায় না বার্লিনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাদের । এর মাঝে সারা জার্মানিতে বার্লিনেই একমাত্র বাংলাদেশ দূতাবাস। ব্যক্তিগত ভাবে উপস্থিত হয়ে ইনফরমেশন সংগ্রহ করা অনেকের জন্যেই অসম্ভব প্রায় ।

এর মাঝে ২৪শে নভেম্বরের পর থেকে এম আর পি পাসপোর্ট ছাড়া ভ্রমন করা যাবে না এই ঘোষনা আসার পর জার্মান প্রবাসীরা অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পরেছেন তাদের এম আর পি পাসপোর্ট তৈরির জন্য। কিন্তু সেখানে উতপত্তি আরেক সমস্যার । এম আর পি পাসপোর্ট তৈরিতে নানাবিধ দলিলাদি চাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস যা প্রবাসীদের কাছে না থাকাই স্বাভাবিক । প্রবাসীদের মতে তারা যেহেতু আগের পাসপোর্ট জমা দিয়ে নতুন পাসপোর্ট চাচ্ছে সেহেতু অহেতূক অতিরিক্ত দলিলাদি নিষ্প্রয়োজন । দলিলাদির মাঝে ন্যাশনাল আইডি কার্ড এবং ১৭ ডিজিট সম্পন্ন জন্মনিবন্ধন পত্র যা বেশিরভাগ প্রবাসীদের কাছেই নেই।

তাই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে আমরা খুজছিলাম এমন একজন যার আছে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে বর্তমান অভিজ্ঞতা। এমনই একজন হচ্ছেন মোহাম্মদ ইমরান হুসাইন যিনি গত ২১শে আগস্ট শুক্রবার গিয়েছিলেন বার্লিনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে তার এম আরপি পাসপোর্ট নবায়নের জন্যে। তার অভিজ্ঞতা এভাবেই ব্যক্ত করলে জার্মান বাংলা টিমের সাথে, যা আমরা হুবহু তুলে ধরলাম তার লিখনিতে –

লক্ষ্য বার্লিন ডোভস্ট্রাসে, ছুটছি প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দুরের শহর মানহাইম থেকে। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এর জন্য সশরীরে ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো যত বড় প্রত্যাশা নিয়ে এম্বেসী তে গিয়েছিলাম তার অনেক টাই আশাহত হতে হলো এম্বেসী বিল্ডিং এর নিচে এসে দাড়িয়ে। কোনই রিসেপশনিস্ট নেই, তাছাড়া পতাকা টা ছাড়া বোঝার ও উপায় নেই যে এটা একটা দেশের প্রতিনিধিত্ত্বকারী ভবন। যদিও পুরো ভবনটি বাংলাদেশ এম্বেসী এর জন্য নয়।01

যাইহোক, সাক্ষাতের সময় ছিল বিকেল চারটায়; সেই ভবনের দোতলায়। যথারীতি আগেই পৌছাতে পেরে ভালো লাগছিল। ডোর বেল চেপে অপেক্ষা করছিলাম, যখন বুঝলাম যে কেউ খুলবেনা তখন দরজা ঠেলেই ঢুকে পরলাম কাঙ্খিত বাংলাদেশ এম্বেসী তে। প্রচন্ড পিপাসার্ত ছিলাম। কিন্তু পানি খাবার মত কোন ব্যবস্থাই চোখে পড়লনা। মোটামুটি বিশাল এক কক্ষ জুড়ে বেশ কিছু চেয়ার টেবিল আর এক কোনে আমাদের প্রিয় দেশের পতাকা।0203

কিছুক্ষণ পর ডাক পড়ল। পুরো এম্বেসী জুড়েই একজন কেই চোখে পরেছে এবং এই একজন এর সাথেই সাক্ষাত করতে পেরেছিলাম। ঠিকানা, ফোন নম্বর সহ মোটামুটি সকল তথ্য দেবার পরে আসলো ছবি তোলার প্রসঙ্গ। তো উনি বললেন ছবি না তুললেও হবে কারণ আমার চেহারায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। তো ছবি তোলা এবং সাক্ষর দেবার পর্বটি বাদ দেয়া হলো।
এই ফাকে কিছু গরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখা ভালো, MRP (Machine Readable Passport) পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়না। যাদের MRP আছে কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণর কাছাকাছি তাদের নতুন পাসপোর্ট আবেদন এর সময় ইচ্ছে করলে পূর্বের ছবি এবং সাক্ষর বহাল রাখতে পারেন। আবেদন এর সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলোর অবশ্যই দুটো সেট করতে হবে। কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন সেটা খুব সুন্দর ভাবে এই লিংক http://bangladeshembassy.de/pdf/P-1%20Circular%20How%20to%20Apply%20MRP.pdf এ দেয়া আছে।
সাক্ষাত্কার পর্বের পর ওনারা আপনাকে একটি ডকুমেন্ট/পেপার (ডেলিভারি স্লিপ) দিবেন এবং এক থেকে দু মাস এর সময় নিবেন। সময়টা এ কারণে যে তারা পাসপোর্ট বাংলাদেশ থেকে করিয়ে নিয়ে আসেন। পাসপোর্ট পাওয়া মাত্রই ওনারা আপনাকে আপনার ইমেইল এ অবহিত করবেন। যদি আপনি পোস্ট এর মাধ্যমে পাসপোর্ট টি পেতে চান তবে আপনাকে ওই ডকুমেন্ট বা পেপার (ডেলিভারি স্লিপ)এর কপি, পুরাতন পাসপোর্ট, বাংলাদেশ এম্বেসী কে authorize করে একটি অনুমতি পত্র (একটি পেপার/পত্র এর মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ এম্বেসী কে আপনার পাসপোর্ট টি পাঠানোর জন্য অনুমতি দিবেন), বর্তমান ঠিকানা লিখিত একটি খাম, এবং স্ট্যাম্প সহ ওনাদের ঠিকানায় পাঠাতে হবে। ওনারা যত দ্রুত সম্ভব পাসপোর্ট টি আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিবেন।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, আবেদন এর সময় কারো যদি বাংলাদেশ এর ভোটার/জাতীয় আইডি কার্ড অথবা জন্মসনদ না থাকে তাহলে অতিদ্রুত বাংলাদেশের কোনো স্থান থেকে জন্মসনদ টি করিয়ে নিতে পারেন। কারণ পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ায় এই কার্ড বা জন্মসনদ এ উল্লেখিত ১৭ সংখ্যার ডিজিট লাগবেই।
কারো যদি ভিসার মেয়াদ সম্পর্কিত সমস্যার জন্য অতি দ্রুত পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয় তারা ইচ্ছে করলে সাক্ষাত্কার পর্ব শেষের ওই ডকুমেন্ট/ পেপার টি দেখিয়ে জার্মান ভিসা বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আর যারা আপনাদের ফেসবুকে জার্মান বাংলার প্রতিটি খবর পেতে চান তারা এখানে ক্লিক করে আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে লাইক দিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে জার্মান বাংলায় প্রকাশিত প্রতিটি খবর আপনার ফেসবুক নিউজ ফিডে পেয়ে যাবেন। আর আমাদেরকে আপনার লিখা অথবা চারিপাশের খবর পাঠাতে ইমেইল করুন [email protected] ধন্যবাদ।

*****লেখাটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুণ!*****