সৌদি আরব সহ কয়েকটি দেশে নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তায় নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের বাসায় না রেখে বিভিন্ন হোস্টেলে রাখা হবে। সেখান থেকে তারা কাজে যাতায়াত করবেন।

এর ফলে অভিবাসী নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের সম্ভাবনা কমে আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশে অভিবাসী নিয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি সংস্থা রামরু। বাংলাদেশের সরকারি হিসেবে এই বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ৬০ হাজার শ্রমিক বিভিন্ন দেশে গেছে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলো বলছে এই সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।

এর অর্ধেকের বেশি শ্রমিক গিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। এদের বড় একটি অংশ নারী শ্রমিক, যারা মূলত গৃহকর্মী হিসাবে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কাজ করতে যান। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন একটা প্রতিষ্ঠান, রামরু’র প্রধান তাসনিম সিদ্দিকী বলছেন, অভিবাসনের হিসাবে ২০১৭ সালটি একটি ভালো বছর, কারণ এ বছর ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী হয়েছে। এদের অর্ধেকের বেশি গেছেন সৌদি আরবে। ২০১৭ সালটা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য কেমন ছিল এই নিয়ে আজ একটি প্রতিবেদন দেবে রামরু। সংস্থাটির প্রধান তাসনিম সিদ্দিকী বলছেন, এ বছরে একটি সৌদি আরব ও সেখানকার দেশগুলোয় নারী শ্রমিকদের পরিবেশেও বড় পরিবর্তন হচ্ছে।

তিনি বলছেন, ‘নারী শ্রমিকদের ওপর গৃহের অভ্যন্তরে নির্যাতন যে পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে তা নয়। তবে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে একটি বড় অগ্রগতি হয়েছে যে, সেখানে কর্মরত নারীদের বাড়িতে না রেখে বিভিন্ন ধরনের হোস্টেল তৈরি করে সেখানে নারী শ্রমিকদের রাখা, সেখান থেকে তাদের কাজে আনা-নেওয়া করার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেটা যদি সফল হয়, নারী যদি গৃহে বন্দি না থাকেন, তাহলে তাদের ওপর যৌন নির্যাতন বা শারীরিক নির্যাতনের সুযোগ কমে যাবে। বিদেশ থেকে অভিবাসী শ্রমিক আবার দেশেও ফিরে আসছে বলেও রামরু তাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছে।

এই অভিবাসী শ্রমিকরা দেশে ফিরে আসার পর যাতে তাদের সঞ্চিত অর্থ ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে, সে জন্য সরকারি প্রণোদনা দরকার বলে ড. সিদ্দিকী মনে করেন। ২০১৭ সালে ইউরোপে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশিদের অভিবাসী হওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছিল। যারা সমুদ্র পথে লিবিয়া হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঢুকে পড়েছিলেন। এসব কারণে এ বছরে বাংলাদেশকে কোণঠাসা অবস্থায় পড়তে হয়েছে বলে বলছেন ড. সিদ্দিকী।